অনলাইন ডেস্ক॥ যখন মিডিয়ার লোকজন ক্যামেরা নিয়ে
ঢুকলেন তাঁর ঘরে, তখন সালমান আমার ঠাকুমাকে
জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘আপনার দুঃখ এবার থেকে আমার দুঃখ। ’
বলিউডের
অন্দরমহলে সাচ্চা কথার লোক হিসেবে সালমান খানের খ্যাতি রয়েছে।
লোকে বলে, সলামান
এক বার কাউকে কোনও প্রতিশ্রুতি দিলে, সেই কথা
অবশ্যই রাখেন। কিন্তু
ইন্দোরের মেয়ে মণীষার অভিজ্ঞতা অন্য কথা বলছে। হাতে একটা ১০০০ টাকার নোট
আঁকড়ে ধরে তিন বছর ধরে তিনি অপেক্ষা করছেন, কবে
সালমান তাঁর ঠাকুমাকে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন।
ঘটনাটা
ঠিক কী?
২০১৪ সালে রিলিজ করে সালমানের অভিনীত সিনেমা ‘জয়
হো’। ২০১৩ সালে সেই ফিল্মের
প্রচারে ইন্দোর গিয়েছিলেন সালমান। ঘটনাচক্রে সালমানের জন্মও ইন্দোরে। তাঁর জন্মের সময়ে দাই-এর ভূমিকা
পালন করেছিলেন রুক্মিনী নামের এক নারী। প্রসব থেকে শুরু করে সদ্যোজাত
সালমানের গায়ে তেল মালিশ করা পর্যন্ত সমস্ত
দায়িত্বই পালন করেছিলেন রুক্মিনী। ২০১৩-তে ইন্দোরে গিয়ে সালমান সেই রুক্মিনীকে
খুঁজে বার করেন, এবং তাঁর সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা
প্রকাশ করেন। বৃদ্ধা
রুক্মিনী তাঁর দুই নাতনিকে নিয়ে হোটেলে গিয়ে দেখা করেন সালমানের সঙ্গে। সেই দুই নাতনির মধ্যেই একজন হলেন
মণীষা।
কেমন ছিল
সেই সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা? মণীষা জানাচ্ছেন, ‘সালমান
স্যারকে আমার খুব ভাল মানুষ বলে মনে হয়েছিল। বহু কষ্টে তাঁর সঙ্গে দেখা করার
জন্য মিনিট পাঁচেক সময় পেয়েছিলাম আমরা। দু’-চারটি
কথা বলার পরেই ওঁর পিএ এসে বললেন, এবার আমাদের
যেতে হবে। কারণ
বাইরে আরও অনেক মানুষ সালমানের সঙ্গে দেখা করবেন
বলে অপেক্ষা করে রয়েছেন। তখন সালমানই আমার ঠাকুমার হাত ধরে বললেন, আপনারা
বসুন। তার
পর নিজের পিএ-কে বললেন, বাকিদের অপেক্ষা করতে বলুন। আরও কিছুক্ষণ
কথা বলার পরে যখন মিডিয়ার লোকজন ক্যামেরা নিয়ে ঢুকলেন তাঁর ঘরে, তখন
সালমান আমার ঠাকুমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘আপনার
দুঃখ এবার থেকে আমার দুঃখ। আপনি আমার সঙ্গে মুম্বাইয়ে এসে
দেখা করবেন। নাতনিদের
ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনি কোনও দুশ্চিন্তা করবেন না। ওদের যাবতীয় দায়িত্ব এখন থেকে
আমার। ওদের পড়াশোনার
সমস্ত খরচ আমি বহন করব। ’
তার পরে নিজের পিএ-কে ঠাকুমার নম্বর নিতে
বললেন। তিনি
নম্বর নেয়ার পরে সালমান বললেন, তিনি সময়মতো
ফোন করবেন
ঠাকুমাকে। ’
এর
পরে হোটেলের ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন মণীষারা। সালমানের পিএ মণীষার ঠাকুমার
হাতে হাজার কয়েক রুপি গুঁজে দেন। কিন্তু হোটেলের বাইরে ভিড়ের
মধ্যে ঠেলাঠেলিতে রুক্মিনীর হাত থেকে রুপি পড়ে
যায়। রয়ে
যায় কেবল একটি হাজার রুপির নোট।
সেই হাজার
রুপির নোট আঁকড়ে ধরেই তার পর থেকে সালমানের ফোনের অপেক্ষায় বসে রয়েছেন
মণীষা। তাঁর
বিশ্বাস,
আজ হোক বা কাল, সালমান
নিশ্চয়ই তাঁর দেয়া কথা রাখবেন। অভাবের সংসারে সকলের মুখে হাসি
ফুটবে সালমানের কৃপায়। কিন্তু তিন বছর
কেটে গেছে। সালমানের
সেই ফোনও আজও আসেনি। মণীষা অবশ্য বলছেন, ‘সালমান স্যার
খুব ভাল মানুষ। হয়তো
কোনও কাজে ব্যস্ত রয়েছেন বলে যোগাযোগ করতে পারছেন
না। কিন্তু
একদিন না একদিন তিনি তাঁর দেয়া কথা ঠিকই রাখবেন।

No comments:
Post a Comment