HONS. COMPULSORY ENGLISH

Search This Blog

Wednesday, December 21, 2016

ক্ষুধার জ্বালায় সাহায্য চাইছে রোহিঙ্গারা-সৌজন্যে ড্যাফোডিল ইংলিশ কোচিং, দৌলতপুর খুলনা—০১৭১৭-০৮৭১৯৯/০১৯১৭-৪৬১৬০৫’




কক্সবাজার-টেকনাফ আঞ্চলিক মহাসড়কের উখিয়া উপজেলার কুতুপালংগতকাল বুধবার সকাল আটটার দিকে দেড় বছরের ছেলেকে কোলে নিয়ে মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে পথচারীদের কাছে সাহায্য চাইছিলেন এক নারীবলছিলেন, ক্ষুধায় ছেলেটা কাঁদছে পাশে আছে আরও চার শিশু
জানা গেল, ওই নারীর নাম সেতারা বেগম (২৭) কোলের ছেলেটির নাম মিজানবাড়ি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বুড়া সিকদারপাড়ায়১৭ ডিসেম্বর রাতে তিনি এই পাঁচ শিশুসন্তান নিয়ে কুতুপালং অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় নেনশিবিরের একটি ঝুপড়িঘরে গাদাগাদি করে রাত কাটাচ্ছেনঠিকমতো খাবার না পাওয়ায় ছেলেমেয়েরা ক্ষুধায় কান্নাকাটি করেবাধ্য হয়ে পথে নেমেছেন
সেতারার ভাষ্য, ১২ ডিসেম্বর রাতে সেনারা তাঁদের গ্রাম ঘিরে ফেলে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েমগ যুবকেরা বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করেনএ সময় গুলিতে তাঁর স্বামী মমতাজ মিয়া ও বাবা কাজল আহমদ নিহত হনকোনোমতে পাঁচ সন্তান নিয়ে তিনি পাশের জঙ্গলে আশ্রয় নেনএরপর টাকার বিনিময়ে দালালের মাধ্যমে কুতুপালং পৌঁছানতিনি বলেন, তাঁদের দোকানে অনেকে ভিক্ষা নিতে আসতবাংলাদেশে পালিয়ে এসে এখন তাঁকে ভিক্ষা করতে হচ্ছে
সেতারার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তাঁর চার ছেলেমেয়েও লোকজন যাওয়ার সময় হাত পাতছিল
গতকাল সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মহাসড়কের অনেক জায়গায় সেতারার মতো অনেক রোহিঙ্গা নারীকে দেখা গেলসড়কে চলাচলকারী যানবাহন থেকে কোনো যাত্রী টাকা ছুড়ে দিলে তা নিতে চলছে রোহিঙ্গাদের দৌড়ঝাঁপ
দুপুর ১২টার দিকে কুতুপালং সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করছিলেন রোহিঙ্গা যুবক সলিম উল্লাহহাতে দামি একটি মুঠোফোনতা দেখে কেউ ভিক্ষা দিচ্ছে নাভিক্ষার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্ত্রী ও চার ছেলেমেয়ে না খেয়ে আছেমিয়ানমারে ধনসম্পদ যা ছিল, সব কেড়ে নিয়েছেএখানে পৌঁছাতে পৌঁছাতে ফকির হয়ে গেছিমিয়ানমারের মুঠোফোনসেট বলে কেউ কিনতেও চাইছে না
টেকনাফের লেদা সড়কে ভিক্ষা করছিলেন রোহিঙ্গা নারী মরিয়ম বেগম, নূর বিবি, মরিয়ম খাতুনসহ বেশ কয়েকজনমরিয়ম বললেন, প্রচণ্ড শীতে সর্দিজ্বরে আক্রান্ত তিন শিশুসন্তান, ওষুধ কেনার টাকা নেইতাই সাহায্যের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়েছেন
কুতুপালং সড়কের দক্ষিণ পাশের মুদি দোকানি জসিম উদ্দিন (৩৪) বলেন, তিন দিন ধরে রোহিঙ্গারা সড়কে এসে ভিক্ষা চাইছেনদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন এসে রোহিঙ্গাদের সাহায্য-সহযোগিতা দিচ্ছে
কুতুপালং অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা শিবির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবু ছিদ্দিক বলেন, কয়েক বছর ধরে এই শিবিরে অবস্থান করছে প্রায় ৯০ হাজার রোহিঙ্গাগত ৯ অক্টোবর রাখাইন রাজ্যের তিনটি পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার পর এ শিবিরে ঢুকেছে আরও ১৬ হাজার রোহিঙ্গাএসব রোহিঙ্গা পুরোনো রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়িতে (বস্তিতে) আশ্রয় নিলেও খাবারের তীব্র সংকট চলছেকিছু ব্যক্তি ও বেসরকারি সংস্থা রাতে লুকিয়ে ত্রাণ তৎপরতা চালালেও তা কমঅনিবন্ধিত শিবিরের রোহিঙ্গারা সরকারি সাহায্যও পায় না
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, উখিয়া ও টেকনাফের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে নতুন আসা ৩৫ হাজারের মতো রোহিঙ্গাএর বাইরে জেলার বিভিন্ন স্থানে বাস করছে আরও পাঁচ লাখের মতো রোহিঙ্গাবিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা নিয়ে প্রশাসন বিব্রত

No comments:

Post a Comment