যুদ্ধকবলিত দেশ ইয়েমেনে
শিশুদের মধ্যে ক্ষুধার পীড়ন এ যাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ
পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক অঙ্গসংস্থা ইউনিসেফ। দেশটির
৪ লাখেরও বেশি শিশু অনাহারে মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে । এর
মধ্যে ২২ লাখ শিশুর জন্য জরুরি সুরক্ষা প্রয়োজন বলেও জানানো হয়েছে। ইউনিসেফের
নতুন এক প্রতিবেদনে এসব সতর্কতা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। আলজাজিরা।
গত সোমবার প্রকাশিত
ইউনিসেফের প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশুদের মধ্যে ক্ষুধার পীড়ন
'এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ' পর্যায়ে পেঁৗছেছে। কমপক্ষে
৪ লাখ ৬২ হাজার শিশু প্রচ-রকমের অপুষ্টিতে ভুগছে। ২০১৪
সালের পর থেকে শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির মাত্রা ২০০ শতাংশ
বেড়েছে। ইউনিসেফের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অপুষ্টি, ডায়রিয়া
ও শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত জটিলতার কারণে প্রতি ১০ মিনিট অন্তর ১টি
শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। সংস্থাটির
ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধি মেরিটঙ্লে রেলানো এক বিবৃতিতে বলেন, 'মধ্যপ্রাচ্যের
দরিদ্রতম এ দেশটির শিশুদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি এখনকার মতো এতো
বিপর্যয়ে আগে কখনও পড়েনি। ইয়েমেনে অপুষ্টির
হার এখন সর্বোচ্চ ও তা ক্রমাগত বাড়ছে।' পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর
মৃত্যুর একটি বড় কারণ প্রচ- রকমের অপুষ্টি। ২০১৪
সালে ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হাউথি বিদ্রোহীরা সাবেক
প্রেসিডেন্ট আলী আব্দুল্লাহ সালেহর প্রতি অনুগত সেনা সদস্যদের
সঙ্গে একজোট হয়ে রাজধানী সানাসহ দেশের বড় একটি অংশ নিয়ন্ত্রণে নেয়ার
পর থেকেই বিভিন্ন সংঘাতে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে ইয়েমেন। গত ২৬
মার্চ ২০১৫ থেকে ইয়েমেনে 'অপারেশন ডিসাইসিভ স্টর্ম' নামে
সামরিক অভিযান পরিচালনা শুরু করে সৌদি আরব ও তার মিত্র
দেশগুলো। ইয়েমেনের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট আব্দ-রাব্বু
মানসুর হাদির কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে
এ বিমান অভিযান পরিচালনা করা হয়। এর আগে দেশজুড়ে
হাউথি বিদ্রোহীদের উত্থানের মুখে দেশ ছাড়েন হাদি। ইয়েমেনে
সৌদি বিমান হামলা শুরুর পর ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত
হয়েছেন। এছাড়াও বাস্তুচ্যুত হয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। ক্রমাগত
লড়াই ও বিমান হামলার কারণে ইয়েমেনের অনেক বড় বড় এলাকার মানুষের
কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাতে পারছে না মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো।

No comments:
Post a Comment